প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি তোমরা নিশ্চয়ই মাথা ঘুরানোর কারণ কি এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্বন্ধে জানতে এসেছো। এই পোস্টে আমি তোমাদের মাথা ঘুরানোর কারণ কি এ বিষয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্বন্ধে কিছু কথা বলব। মাথা ঘুরানো এই সমস্যাটার সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। আমি এই পোস্টে আপনাদের মাথা ঘুরানোর এই গুরুত্বপূর্ণ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। আপনি যদি মাথা ঘুরানোর এই রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ বিস্তারিত জানতে চান এই পোস্টটি পুরোটা পড়ুন ।
 |
অতিরিক্ত মাথা ঘুরানোর কারণ কি |
আপনি যদি জানতে চান মাথা ঘুরানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্বন্ধে, তাহলে এই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক মাথা ঘুরানোর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে।
ভুমিকাঃ মাথা ঘুরানোর কারণ কি ?
হঠাৎ মাথা ঘোরার কারণে কেউ মাটিতে পড়ে যেতে পারে ফলে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই একেবারে ও অবহেলা করা যাবে না। আমাদের অনেক কারণেই মাথা ঘুরতে পারে। তবে কানের ভেতর ভেস্টিবুলোককলিয়ার নামক স্নায়ুতে সমস্যার কারণে বেশির ভাগ সময় মাথা ঘোরে।
অতিরিক্ত পরিশ্রম করা, দুশ্চিন্তায়, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফলে, অন্তঃকর্ণের রক্তনালির অস্বাভাবিকতায়, অন্তঃকর্ণের প্রদাহ, মেনিয়ারস রোগ, অস্বাভাবিক দৃষ্টিগত সমস্যা, অনেক উঁচুতে উঠে নিচের দিকে তাকালে এবং চলন্ত ট্রেন বা গাড়ি থেকে প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে আমাদের মাথা ঘোরে। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, মাথার পেছন দিকে ও ঘাড়ের রক্তনালিতে বাধা বা রক্ত সরবরাহে ত্রুটি, মস্তিষ্কের নিচের দিকে টিউমার, মাল্টিপল স্লেরসিস রোগ, ভাইরাসজনিত ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস, মধ্যবয়সীদের মিনিয়ার্স রোগ, আঘাতের কারণে পেট্রাস হাড়ের ক্ষতি ইত্যাদি কারণেও মাথা ঘুরতে পারে।
মানব দেহের রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলেও মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলেও মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। মাথা ঘোরার পাশাপাশি কানের ভেতর শোঁ শোঁ বা দপ দপ শব্দ হতে পারে। কখনো কখনো মাথার বা ঘাড়ের অবস্থান পরিবর্তন করলে সমস্যা বাড়ে-কমে।
মাথা ঘোরা কিসের লক্ষণ
মাথা ঘোরা শব্দটি এমন লক্ষণগুলির একটি সাধারণ বিবরণ যা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে খুব পৃথকভাবে অভিজ্ঞ হয়। চিকিত্সার ভাষায়, আমরা ভার্টিগো এবং ভার্টিগোয়ের মধ্যে পার্থক্য করি।
মাথা ঘোরা আমাদের বেশিরভাগই অনুভূতিটি অনুভব করেছেন। আপনি অস্থির এবং অস্থির বোধ করেন এবং একটি দোলা এবং নড়বড়ে অনুভূতি অনুভব করেন। অনেকের মাথায় কান অনুভূত হয় এবং এটি চোখের সামনে একটু কালো হয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিরোগ একটি আরও তীব্র এবং শক্তিশালী অভিজ্ঞতা যা হয় আশেপাশে বা নিজেরাই ঘোরানো হয়; একটি ক্যারোসেলের মতো অনুভূতি (গিরিটরি ভার্টিগো)। অন্যরা একটি দোলা অনুভূতি অনুভব করে, যেন নৌকোটিতে চড়ে।
মাথা ঘুরানো থেকে মুক্তির উপায়
১. পানি পান করুন
পানিস্বল্পতার কারণে অনেক সময় মাথা ঘোরার সমস্যা হয়।
এমন হলে পানি পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন। পাশাপাশি আপনি সামান্য মধু দিয়ে ভেষজ চা পান করতে পারেন। এ ছাড়া খেতে পারেন ফলের জুস।
২. কিছু খান
রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই এমন হলে স্বাস্থ্যকর কোনো স্ন্যাকস খান। এতে সমস্যা কমতে সাহায্য হবে। এ ক্ষেত্রে উচ্চ পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন খাবার খেতে পারেন। যেমন : চকলেট, কলা খেতে পারেন। পাশাপাশি খেতে পারেন একমুঠো বাদাম । যেমন : কাঠবাদাম, ওয়ালনাট ইত্যাদি।
৩. আদা
আদা বমি ও বমিভাব কমাতে উপকারী। এটি মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, দ্রুত মাথা ঘোরার সমস্যা কমায়। তাই মাথা ঘোরার সমস্যা হলে এক টুকরো আদা চিবিয়ে খান। পাশাপাশি খেতে পারেন আদা চা।
৪. স্বাস্থ্যকর খাবার খান
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া স্নায়ু পদ্ধতিকে ভালো রাখে। এতে রক্তস্বল্পতা, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ হয়। এ ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় আয়রন, ভিটামিন এ, ফলিস এসিড ও আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।
৫. ঘুমান
অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলেও মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিন। প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান।
মাথা ঘোরা ও চোখে ঝাপসা দেখার কারন কি
হঠাৎ প্রেসার অতিরিক্ত কমে গেলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃদপিণ্ডে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আচমকা প্রেসার লো হলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি বোধ, অজ্ঞান হওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড়, অবসাদ, চোখে ঝাপসা দেখা এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।
সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০। সেটা ৯০/৬০ বা এর আশপাশে থাকলে লো ব্লাড প্রেসার হিসেবে গণ্য করা হয়। এরকম অবস্থায় মানবদেহে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। এছাড়া মাথা ঘোরা ও চোখে ঝাপসা দেখার অনেক কারন রয়েছে ।
মাথা ঘুরানোর ঔষধের নাম
মাথা ব্যাথার ঔষধ বা ট্যাবলেট এর নাম
নিচে মাথাব্যথার কিছু ওষুধের নাম দেওয়া হলো
- Paracetamol+caffeine
- Napa Extra
- Ace Plus
- Reset Plus
- Cafedon
- Cafenol
- Caffo
- Clofamol Extra
- Fap Plus
- Feverex
- Tolfenamic Acid
- Loragin
- Anilic
- Migesic
- Migratol
- Migrex
- Tolfem
- Tolfort
- Tolmic
- Tufnil
- Namitol
- Naproxen
- Anaflex
- Diproxen
- Napro
- Naporo-A
- Naprosyn
- Naprox
- Napryn
- Naspro
- Nuprafen
কোন ব্যথার ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন সেবন করা উচিৎ নয়।
ডক্তারের নির্দেশ মতো ওষুধ সেবন করুন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
হঠাৎ মাথা চক্কর দেওয়ার কারণ
বসা থেকে বা হঠাৎ শোয়া অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালে অনেকেরই মাথা ঘুরে যায় বা চক্কর দিয়ে ওঠে। এমন সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এই সমস্যা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হয়। তাই এটি নিয়ে তেমন মাথাও ঘামান না অনেকেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই সমস্যাকে একেবারেই অবহেলা করা ঠিক নয়। কারণ এর থেকে ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করে থাকতে পারে। চলুন জেনে নিই এই মাথা ঘুরানোর আসল কারণ-
এই সমস্যার সঙ্গে নার্ভ বা স্নায়ুর সম্পর্ক আছে। অনেকেরই স্নায়ুর সমস্যার কারণে হঠাৎ শোয়া অবস্থা থেকে উঠলে বা বসা অবস্থা থেকে উঠলে মাথা ঘুরে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখে অন্ধকার দেখেন অনেকে। নার্ভের সমস্যা থেকেই এটি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এটিকে অবহেলা না করাই ভালো। আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এখনই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ নার্ভের সমস্যা অবহেলা করলে তার থেকে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হতে পারে।
অনেকের সঙ্গে আবার ব্লাড প্রেশারের কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকে। রক্ত চাপ কম থাকলে অনেক সময় হুট করে উঠে দাঁড়ালে মাথায় সঠিক পরিমাণ রক্ত পৌঁছায় না। যার ফলে অনেকের এই মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই এই সমস্যা থাকলে প্রেশার চেক করিয়ে নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মতো প্রেশার স্বাভাবিক করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
শেষ কথাঃ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাঁদের মধ্যে বসা বা শোওয়া অবস্থা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ালে মাথার ঘোরার সমস্যা আছে, তাঁদের ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া হতে পারে। অর্থাত্ সবকিছু ভুলে যাওয়ার অসুখ গ্রাস করতে পারে তাদের। এ ছাড়াও মাথায় নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই যদি এই লক্ষণ থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আবশ্যক।
তথ্যসূত্রঃ ওয়েবসোর্স